দাবি অনুযায়ী কমিশন না বাড়ায় ওএমএস ডিলাররা নাখোশ
জনতা ডেস্ক
খোলা বাজারে বিক্রির (ওএমএস) পণ্যের কমিশন বাড়ানো হচ্ছে। তবে ডিলারদের দাবির তুলনায় তা বেশ কম হওয়ায় তারা নাখোশ। এমনকি দাবি পুরোপুরি মানা না হলে আন্দোলনেরও হুঁশিয়ারি দিয়েছে ডিলাররা। খাদ্য মন্ত্রণালয় ওএমএসের ডিলারদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে চালে কেজিপ্রতি কমিশন দেড় থেকে বাড়িয়ে ২ টাকা এবং আটায় ১ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২ টাকা করার সুপারিশ করেছে। সম্প্রতি ওই সুপারিশ অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু চাল ও আটা- উভয় পণ্যে ডিলাররা কমিশন দাবি করেছে কেজিপ্রতি সাড়ে ৪ টাকা করে। ওএমএস ডিলার ও খাদ্য মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, ডিলারদের দাবি, তারা যে পরিমাণ কমিশন পায় তাতে তাদের পোষাচ্ছে না। কারণ প্রতিটি ডিওতে (এক টন চাল ও এক টন আটা মিলে একটি ডিও) তারা মোট আড়াই হাজার টাকা কমিশন পায়। তার মধ্যে চালে দেড় হাজার ও আটায় এক হাজার টাকা। অথচ তাদের প্রতিদিনের ট্রাক ভাড়াই রয়েছে ৩ হাজার টাকা। তার সাথে ২ জন কর্মচারীর এক হাজার টাকা বেতন যোগ করলে লোকসানের পরিমাণ আরো বেড়ে যায়।সূত্র জানায়, আতপ চাল নিয়ে ডিলাররা আরো বিপদে পড়েছে। ওই চাল বিক্রিই হয় না। কারণ ঢাকার মানুষ আপত চালে অভ্যস্ত না। তারপরও সরকারের কাজে সহযোগিতা করার জন্যই ডিলাররা আতপ চাল বিক্রি চালিয়ে যাচ্ছে। সিদ্ধ চাল হলে হয়তো কেউ খুশি হয়ে কিছু টাকা বেশি দেয়। কিন্তু আতপ চাল বিক্রি করতে উল্টো অনেক বোঝাতে হয়। ওই কারণে গত ১৭ সেপ্টেম্বর খোলা বাজারে আতপ চাল বিক্রি শুরুর পর থেকেই ডিলারদের মধ্যে অনীহা দেখা গেছে। সম্প্রতি তাদের ধর্মঘটে যাওয়ার কথা ছিল। তবে খাদ্য অধিদপ্তর মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার আশ্বাস দিলে ওই কর্মসূচি থেকে সরে আসে ডিলাররা। সূত্র আরো জানায়, দেশে চালের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় খোলা বাজারে প্রতি কেজি ৩০ টাকায় আতপ চাল বিক্রি শুরু করে সরকার। তাছাড়া ১৭ টাকা দরে আটাও বিক্রি করা হচ্ছে। ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে মোট ৮৬টি ট্রাকে ওসব পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। কিন্তু ক্রেতাদের আশানুরূপ সাড়া না পেয়ে গত শনিবার ডিলার সমিতির প্রতিনিধিরা খাদ্যমন্ত্রীর সাথে দেখা করেন। তখন মন্ত্রী তাদের আন্দোলন থেকে সরে এসে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে বলেন। মন্ত্রী ডিলারদের জানিয়েছেন, এরই মধ্যে চালে ৫০ পয়সা এবং আটায় এক টাকা পর্যন্ত কমিশন বাড়িয়ে দেয়ার সুপারিশ অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে পাঠানো হয়েছে। তবে ডিলাররা তাতে সন্তুষ্ট হতে পারেনি।
এদিকে এ প্রসঙ্গে ওএমএস ডিলার সমিতির সভাপতি আলমগীর সৈকত জানান, 'আমরা প্রথমবার আন্দোলনে যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু মন্ত্রী আমাদের সাথে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের জন্য ডেকেছিলেন। তিনি আমাদের যে হারে কমিশন বাড়ানোর কথা বলেছেন, সেটা আমরা প্রত্যাখ্যান করেছি।' তবে তিনি বলেন, এখনই তারা আন্দোলনে যাচ্ছেন না। কমিশন বাড়ানোর যে প্রস্তাবের কথা মন্ত্রী বলেছেন, সেটা বাস্তবায়ন হলে তখন তারা আন্দোলনে যাবেন। অন্যদিকে এ বিষয়ে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম জানান, 'আমাদের কাছে একটি প্রস্তাব এসেছে। আমরা সেটা যাচাই-বাছাই করছি।'
আপনার কোন একাউন্ট না থাকলে রেজিষ্ট্রেশন করুন।