রাণীনগরে ফলন কম হলেও ভালো দাম পেয়ে খুশি শিম চাষিরা
রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি
নওগাঁর রাণীনগরে আগাম জাতের শীতকালীন সবজি শিম চাষে ফলন কম হলেও ভালো দাম পেয়ে খুশি কৃষকরা। তবে আগের চেয়ে উপজেলায় শিম চাষ কমে গেছে বলে জানান কৃষকরা। পোকার আক্রমণের আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।
বর্তমানে বাণিজ্যিকভাবে শিম চাষ না হলেও বাড়ির উঠানে ও মাঠে বিক্ষিপ্তভাবে আজও শিম চাষ চোখে পড়ে। তবে সচেতনতার অভাবে এই লাভজনক শীতকালীন সবজি শিম চাষ হারিয়ে যাচ্ছে বলে ধারণা অনেকের।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা, চলতি বছর উপজেলায় আগাম ও স্বাভাবিক জাতের শিম চাষ হয়েছে কয়েক হেক্টর জমিতে। পূর্বে এই শিম চাষের ব্যাপকতা ছিল অনেক। আর এখান থেকে উৎপাদিত শিম নিজ পরিবার ও স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে যাচ্ছে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন মাঠে গিয়ে দেখা যায় যে, মাঠে মাঠে ও বাড়ির উঠানে বিক্ষিপ্তভাবে সবুজ শিমের আবাদের দৃশ্য। একটু বেশি লাভের আশায় উপজেলার কৃষকরা আগাম জাতের শিম চাষ করে আসছে বহুদিন যাবত। তবে শিমের ডগা পচা, সিদলা ও ছিদ্রকারী রোগ নিয়ে আশঙ্কা করছেন উপজেলার কৃষকরা।
আগাম শিম চাষ লাভজনক হওয়ায় তারা প্রতি বছরই বিক্ষিপ্তভাবে চাষ করে থাকেন। শীতকালীন আগাম জাতের শিম ফলনে কম হলেও বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় খুশি তারা। আর প্রতি বিঘায় বর্তমানে ৪ থেকে ৫ মণ করে শিমের ফলন পাচ্ছেন। কিন্তু পরে তা বেড়ে ৮ থেকে ১০ মণ হবে। শিমের গ্রাম নামে পরিচিত উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামের শিম চাষি মো. আব্দুল মালেক বলেন, বর্তমানে শিম গাছের ডগায় পচানি ও শিম ছিদ্র পোকা দেখা দিয়েছে। কিন্তু বালাইনাশক প্রয়োগ করেও আশানুরূপ তেমন কোনো ফল পাচ্ছেন না তারা। তবে শিম চাষ অধিক লাভজনক হওয়ায় আগামীতে এই আবাদ বৃদ্ধি পাবে। মৌসুমের শুরুতেই শিমের দাম ভালো পাওয়ায় ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া যাবে বলে তিনি জানান।
কৃষি অফিস বলছে শীতকালীন আগাম জাতের সবজি শিম লাভজনক ফসল হলেও বিভিন্ন পোকার আক্রমণ হয়ে থাকে। যারা পরামর্শ চাইছে কৃষি অফিস থেকে তাদের সার্বিক পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে কৃষকদের কীটনাশকের দোকানে না গিয়ে সরাসরি কৃষি অফিসে অথবা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তার মুঠোফোনে কল দিয়ে পরামর্শ নেয়ার জন্য অনুরোধ জানালেন কৃষি বিভাগের এই কর্মকর্তা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে শিম চাষ করা হয় না। তবে বিক্ষিপ্তভাবে জমিতে ও বাড়ির উঠানে কিছু শিম চাষ করা হয়। ইতোমধ্যই কৃষকরা আগাম জাতের শিম বাজারে নিয়ে আসতে শুরু করেছে। তবে আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে একটু পোকা-মাকড়ের আক্রমণ হতে পারে। তবে পোকা ও রোগবালাইয়ের আক্রমণের শুরু থেকেই কোথাও না গিয়ে সরাসরি কৃষি অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের দেয়া পরামর্শ অনুসারে বালাইনাশক প্রয়োগ করলে তেমন একটা প্রভাব পড়বে না বলে আমি আশা করি। এছাড়াও মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক কৃষকদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন।
আপনার কোন একাউন্ট না থাকলে রেজিষ্ট্রেশন করুন।