জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে, গত ২৫ আগস্ট মায়ানমারে নতুন করে সহিংসতা শুরুর পর গত ৩ সপ্তাহে ৩ লাখ ৭০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। যা বর্তমানে ৪ লাখ ছুঁই ছুঁই।
ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ইউএনএইচসিআর’র মুখপাত্র জোসেফ ত্রিপুরা জানান, গত ২৫ আগস্ট থেকে সহিংসতা শুরু হওয়ার পর প্রতিদিন হাজার হাজার মুসলিম রোহিঙ্গা নাফ নদী পার হয়ে বা দুর্গম পাহাড়ি বনাঞ্চল পেরিয়ে বাংলাদেশ সীমান্তে প্রবেশ করছে। এ পর্যন্ত আনুমানিক ৪ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। প্রকৃত সংখ্যাটা আরও অনেক বেশি হতে পারে, কারণ নতুন শরণার্থীদের ¯্রােত অব্যাহত আছে এবং তারা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকায় প্রকৃত সংখ্যাটা নির্ধারণ করাটা কঠিন। গত সোমবার জানা গিয়েছিল ৩ লাখ ১৩ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে রয়েছে। এদিকে জাতিসংঘ শিশু তহবিল-ইউনিসেফ জানিয়েছে, মায়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশের কক্সবাজরে আশ্রয় নেয়া পৌনে ৪ লাখ রোহিঙ্গার মধ্যে ২ লাখের বেশি শিশু মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে।
ইউনিসেফের শিশু সুরক্ষা বিভাগের প্রধান জ্যঁ লিবিকে উদ্ধৃত করে গত মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বলা হয়, এই মানবিক সঙ্কট ক্রমশ বড় আকার ধারণ করছে। আর এই সঙ্কটে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছে শিশুরা। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, শরণার্থীদের মোট সংখ্যার ৬০ শতাংশই শিশু। লিবি বলেন, বড় ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকি এড়াতে ক্যাম্পগুলোতে সুপেয় পানি ও পয়ঃনিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা দরকার। সেজন্য প্রাথমিকভাবে ৭৩ লাখ ডলার প্রয়োজন। ইতোমধ্যে ঢাকা থেকে ইউনিসেফের সহায়তার জরুরি সামগ্রী কক্সবাজারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে লিবি জানান।
তিনি আরও বলেন, প্রতিদিন যে সংখ্যায় রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আসছে তা ‘নজিরবিহীন’। ৪ থেকে ১০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে কেবল ৬ দিনেই ২ লাখ ২০ হাজার শরণার্থী বাংলাদেশে এসেছে। তাদের বাংলাদেশে আসার এই প্রবণতা শিগগিরই থামার কোনো লক্ষণ আমরা দেখতে পাচ্ছি না। ইউনিসেফ বলছে, কক্সবাজারের বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় পাওয়া বিপুলসংখ্যক শিশু বহুদিন ঠিকমতো ঘুমাতে পারেনি। তারা ক্ষুধার্ত এবং দুর্বল হয়ে পড়ছে। রাখাইন থেকে দীর্ঘ দুর্গম পথ পেরিয়ে আসতে গিয়ে তাদের অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এখনই তাদের চিকিৎসা প্রয়োজন।
আপনার কোন একাউন্ট না থাকলে রেজিষ্ট্রেশন করুন।