কুমিল্লায় তরুণীকে উত্ত্যক্তের জের ধরে দু'গ্রামে উত্তেজনা চলছে
ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়ে হামলার হুমকি!
কুমিল্লা ব্যুরো
কুমিল্লার লাকসামে এক তরুণীকে উত্যক্তের ঘটনায় জের ধরে গত পাঁচ দিন যাবৎ দু'গ্রামের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোনো মুহূর্তে ঐ এলাকায় দু'গ্রামের লোকজনের মাঝে রক্তক্ষয়ী সংঘর্র্ষের ঘটনা ঘটতে পারে। প্রশাসনের তড়িৎ হস্তক্ষেপে এ ঘটনার দ্রুত সামাজিক সমাধান চান এলাকাবাসী। জানা যায়, গত ৩ সেপ্টেম্বর/১৭ইং, কোরবানির ঈদের পরদিন থেকে ঐ গ্রামে বিরোধ চলে আসছে। স্থানীয় সূত্র থেকে জানা যায়, কিছুদিন আগে মনপাল গ্রামের এক তরুণীকে পাশের রাজাপুর গ্রামের কয়েকজন যুবক উত্যক্ত করে। এতে মনপাল গ্রামের কয়েকজন যুবক বাধা দিতে গেলেই দু'পক্ষের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। রাজাপুর গ্রামের তরুণরা প্রতিবাদকারীদের ওপর ফের হামলা চালাতে গেলে মনপাল গ্রামবাসী তাদের কয়েকজনকে আটক করে। এ ঘটনার পর লাকসাম থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের ছাড়িয়ে নেয়। ঐ ঘটনায় গতকাল শুক্রবার উত্তরদা ইউনিয়ন পরিষদে দু'গ্রামের মধ্যে এক সালিশ হওয়ার কথা রয়েছে। স্থানীয় সূত্র থেকে আরও জানা যায়, দু'গ্রামের এ অস্থিরতার কারণে মনপালের গ্রামের বাসিন্দা ও স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে রাজাপুরের যুবকরা বাধার ?সৃষ্টি করছে। এ ছাড়াও মনপাল গ্রামে হামলার হুমকি দিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাসও দেয়া হচ্ছে। মনপাল গ্রামের আলী আকবর বলেন, 'রাজাপুর গ্রামের কয়েকজন যুবক আমাদের গ্রামের এক তরুণীকে উত্যক্ত করে। আমরা বাধা দিলে তারা আমাদের ওপরে চড়াও হয়। এ ছাড়াও মনপালে তারা হামলা করার জন্য বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে আসছে। এমনকী গ্রামের শিক্ষার্থীরা তাদের গ্রামের ওপর দিয়ে যাওয়ার সময় বাধা দিচ্ছে। পুরুষরা হাটে বাজারে যেতে ভয় পাচ্ছে। পুরুষরা এখন রাত জেগে গ্রাম পাহারা দিচ্ছে। আমরা এর সুষ্ঠু সমাধান চাই। অন্যদিকে, রাজাপুর গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তি রমজান আলী বলেন, রাজাপুরের দু'জন ছেলে মনপাল গ্রামে মামার বাড়িতে গিয়ে একটি মেয়ের সঙ্গে রসিকতা করতে গেলে ঐ গ্রামের কয়েকজন যুবক তাদের মারধর করে। ঐ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামের যুবকদের মধ্যে এক ধরনের অস্থিরতা তৈরি হয়। মনপালের লোকজনকে হয়রানির বিষয়টি সঠিক নয়। গণউদ্যোগ বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ রঞ্জিত চন্দ্র দাশ বলেন, মানপাল ও রাজাপুর গ্রামের মধ্যে একটি সমস্যা চলে আসছে বলে শুনেছি। এমনকী মনপাল গ্রামের দু'জন অভিভাবক আমার কাছে অভিযোগ দিয়েছেন। আমি এ ব্যাপারে মনপাল ও রাজাপুর গ্রামের কয়েকজন ব্যক্তিকে জানিয়েছি, যাতে আমার শিক্ষার্থীদের কোনও সমস্যা না হয়। এ বিষয়ে লাকসাম থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মাহফুজ বলেন, মনপাল ও রাজাপুর গ্রামের মধ্যে যে অস্থিরতা চলছে তা সমাধানের জন্য দু'গ্রামের ৫জন করে দশ জনকে ডেকে এনে অঙ্গিকারনামা নিয়েছি। আমরা সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি। এ প্রসঙ্গে লাকসাম উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রফিকুল হক বলেন, এ বিষয়ে ওসি সাহেবের সঙ্গ কথা বলবো। আশা করছি দু'গ্রামের মধ্যে উত্তেজনা ও বিরোধ খুব দ্রুত সমাধান হবে।
আপনার কোন একাউন্ট না থাকলে রেজিষ্ট্রেশন করুন।