বায়রা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
সিংগাইরে বারান্দার মেঝেতে চলছে শিক্ষার্থীদের ক্লাস
শিক্ষকদের নেই বসার কক্ষ
সিংগাইর (মানিকগঞ্জ) থেকে সোহরাব হোসেন
মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার বায়রা ইউনিয়নের ৯২ নং বায়রা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় দীর্ঘ ২৩ বছর অতিক্রম করলেও চলছে শ্রেণীকক্ষ সংকটে। বাধ্য হয়ে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাতে হচ্ছে ভবনের বারান্দার মেঝেতে। সরকারিভাবে তেমন কোনো অনুদান না পাওয়ায় আসবাবপত্র সংকট, ব্যবহার অনুপযোগী টয়লেট ব্যবস্থা, কম্পিউটার সুবিধা না পাওয়া, ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী ও শিক্ষক সল্পতাসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে পড়েছে বিদ্যালয়টি।
জানা গেছে, ১৯৯৬ সালে ৩৩ শতাংশ জমির ওপর বায়রা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। সিংগাইর উপজেলা সদর থেকে বিদ্যালয়টির দূরত্ব প্রায় ৮ কিলোমিটার। ২০১৩ সালে বিদ্যালয়টি সরকারিকরণ হয় এবং ৪ তলা ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে তিনটি কক্ষ বিশিষ্ট একতলা ভবন নির্মাণ করা হয়। শিক্ষক ম-লীর জন্য নেই কোনো অফিস কক্ষ। শিক্ষকেরা বারান্দার এক কোণে স্বল্প জায়গায় একটি টেবিল ও কয়েকটি চেয়ার ফেলে গাদাগাদি করে বসে কাজ সারেন। ভবনের তিনটি কক্ষই শিক্ষার্থীদের শ্রেণীকক্ষ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এছাড়া প্রাক-প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের বারান্দার মেঝেতে বসিয়ে পাঠদান করাতে হয়। বর্তমানে ওই বিদ্যালয়ে শিশু শ্রেণীতে ৪৩ জন, প্রথম শ্রেণীতে ৩৯, দ্বিতীয় শ্রেণীতে ৬৮, তৃতীয় শ্রেণীতে ৩৯, চতুর্থ শ্রেণীতে ৩৯ ও পঞ্চম শ্রেণীতে ৩২ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। প্রতি ৪০ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে একজন করে শিক্ষক থাকার কথা থাকলেও বিদ্যালয়টিতে ২৬০ জন শিক্ষার্থীর জন্য শিক্ষক আছেন ৫ জন। বিদ্যালয়টিতে ২০১৭ ও ২০১৮ সালের সমাপনী পরীক্ষায় একাধিক (এ+) প্লাসসহ শতভাগ শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়ে লেখাপড়ায় গুণগত মানেও রয়েছে এগিয়ে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটিতে বিভিন্ন সমস্যার কারণে ডিজিটাল যুগে আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা।
ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিমু খানম বলেন, বিদ্যমান সমস্যাগুলোর সমাধানকল্পে বিদ্যালয়টি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় এনে এলাকার কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠদানের সুযোগ সৃষ্টিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি। স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আব্দুল মান্নান মিয়া বলেন, নানা সমস্যায় জর্জরিত বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া ব্যাহত হচ্ছে।
এ ব্যাপারে সিংগাইর উপজেলা শিক্ষা অফিসার সৈয়দা নার্গিস আক্তার বলেন, বিষয়টি আমাকে কেউ অবগত করেনি। তারপরেও আমি স্কুলটিতে গিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের করুণ অবস্থা দেখে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য প্রস্তাব পাঠিয়েছি।
আপনার কোন একাউন্ট না থাকলে রেজিষ্ট্রেশন করুন।