মৌলভীবাজারে ২ কোটি টাকা চাঁদাবাজি মামলায় ১৬ আসামি বেকসুর খালাস
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
মৌলভীবাজার ১/১১'র আলোচিত দুই কোটি টাকার চাঁদাবাজি মামলা ১৬ আসামীকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন মৌলভীবাজার অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিজ্ঞ বিচারক বাহাউদ্দিন কাজী। ২০১৭ সালের ২৭ এপ্রিল বিজ্ঞ অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. বাহাউদ্দিন কাজী নির্দেশনা পর ওয়ান ইলিভেনের নায়ক জেনারেল মইনের শ্যালক রেজা আহমদ বেনজিরসহ ১৬ জন আসামির বিরুদ্ধে। ২ কোটি টাকার চাঁদাবাজির অভিযোগে আসামিদের অভিযুক্ত করা হয়। রেজা আহমদ বেনজিরসহ ১৬ জন আসামীর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগে দায়ের করা সেই আলোচিত মামলা দীর্ঘ দিন চলার পর রায়ের অপেক্ষায় ছিল। মামলাটি শুনানি হয়ে রায়ের দিনক্ষণের অপেক্ষা করছেন উভয়পক্ষ। গতকাল ৮ সেপ্টেম্বও রবিবার মামলাটি প্রমাণিত না হওয়ায় অভিযোক্ত ১৬ আসামীকে বেকসুর খালাস দেন আদালতের বিজ্ঞ বিচারক। মামলার এজহার সূত্রে জানা যায়, জেনারেল মইনের শাসন কালে ২০০৭-২০০৮ সালে তার স্ত্রীর বড় ভাই মৌলভীবাজার শাহ মোস্তফা রোডের রেজা আহমদ বেনজির অনেকটা বেপরোয়া হয়ে উঠেন। ২০০৭ সালের ১৯ অক্টোবর রাত অনুমান ৩ ঘটিকার সময় বেনজির উল্লেখিত মামলার আসামীদের নিয়ে শহরের বেরিরপারস' মামলার বাদী মোহাম্মদ মুজিবুর রহমান ও বড় ভাই সাবেক ব্রিটিশ কাউন্সিলর ও সিআইপি এম এ রহিমের নির্মাণাধীন এম.আর টাওয়ার-২ এর জায়গা দখল করেন। এসময় তারা ১৭টি দোকানের সিমেন্ট, রড লুট করে নিয়ে যান। প্রায় ১ বছর এই জায়গাটি দখলদারদের হাতে ছিল। তাৎক্ষণিক ভাবে বিষয়টি মৌলভীবাজার মডেল থানাকে জানালে প্রধান আসামি জেনারেল মইনের শ্যালক থাকায় ক্ষমতার দাপটে কোন মামলা নেয়নি পুলিশ। পরবর্তীতে ২০০৮ সালের ৩০ মে অনুমান রাত ৮টায় মামলার আসামিরা সবুজবাগ এম আর টাওয়ার-১ এর সামনের রাস্তা থেকে মামলার বাদী রহিমের ভাই মুজিবুর রহমানকে অপহরণ করে বেনজীরের শাহ মোস্তফা রোডের বাসায় আটকিয়ে রাখে। কিছু সময় পর আসামীরা ৫ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করে। অন্যতায় বাদীকে প্রাণে হত্যার হুমকি দেয়। হত্যার ভয়ে রফাদফার পর বাদী প্রাণ বাঁচাতে ২ কোটি চাঁদা দিতে রাজি হন। পরে রেজা আহমদ বেনজির নেতৃত্বে মুজিবুর রহমানকে সিলেট এইচ.এস.বি.সি ব্যাংক নিয়ে গেলে তিনি সেখান থেকে ৫০ লক্ষ টাকা নগদ তুলে তাদের হাতে দেন। পরবর্তীতে মৌলভীবাজার এসে প্রাইম ব্যাংক মৌলভীবাজার শাখা থেকে পৃথক পৃথক চেকে বিভিন্ন জনের নামে আরও ১ কোটি ৪৭ লাখ ৮১ হাজার ২৫০ টাকা দেয়া হয়। সর্বমোট রেজা আহমদ বেনজিরকে ১ কোটি ৯৭ লাখ ৮১ হাজার ২শত ৫০টাকা চাঁদা আদায় করেন।ওয়ান ইলিভেনের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পর ২০০৮ সালে নির্বাচনে গনতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতায় আসলে সিআইপি রহিমের ভাই মুজিবুর রহমান বাদী হয়ে একই বিষয়ে মৌলভীবাজার মডেল থানায় ২০০৯ সালের ১৫ অক্টোবর রেজা আহমদ বেনজিরকে প্রধান আসামিসহ মোট ১৬ জনের বিরুদ্ধে আসামি করে ১৪৩/৪৪৭/৪৪৮/৩২৩/৩৬৪/৩৮৬/৩৭৯/৩৮০/৫০৬/৩৪ ধারায় মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ২৬০/২০০৯। মৌলভীবাজার মডেল থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা শাহ্ হারুন-অর রশিদ ১৪/০২/২০১০ সালে এজহার ভুক্ত আসামিদের অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। বিজ্ঞ আদালতের বিচারক মো. বাহাউদ্দিন কাজী বিগত ২৭/০৪/১৭ তারিখে ১ নং আসামী বেনজির আহমদ রেজা, ফয়ছল আহমদ, জাহাঙ্গীর আহমদ, আব্দুর রউফ, আঃ বারী, ফরিদ আহমদ, সোহেল আহমদ, কাওছার আহমদ, আকলিমুন্নেছা, ফয়জুন্নাহার, জামাল আহমদ, তুহিন আহমদ, তোফায়েল আহমদ, নুফিল আহমদ, সামছুননাহার ও রয়জুন্নাহারের বিরুদ্ধে পেনাল কোডের ১৪৩/৪৪৭/৪৪৮/ ৩২৩/৩৬৫/৩৮৬/৩৭৯/৩৮০/৫০৬/৩৪ ধারায় অভিযোগ গঠন করা হয়। আসামি পক্ষের আইনজীবী তাদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট, ভিক্তিহীন ও ষড়যন্ত্রমূলক বলে আদালতে দাবি করলে আদালত এটা না মঞ্জুর করেন। রাষ্ট্র পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন এপিপি মুজিবুর রহমান বাচ্চু। আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন এডভোকেট হাবিবুর রহমান মুকুল। আসামি পক্ষের আইনজীবি বলেন বিজ্ঞ আদালত ন্যায় বিচার প্রতিষ্ট্রিত করেছেন।
আপনার কোন একাউন্ট না থাকলে রেজিষ্ট্রেশন করুন।