মানিকগঞ্জ থেকে আলো খান ও এ.বি. খান বাবু
আসন্ন ঈদ উল আযহা উপলক্ষে মানিকগঞ্জের প্রত্যেক হাট-বাজারে টুং টাং শব্দে ব্যস্ত সময় পার করছে কামাররা। সারাবছর অলস সময় পার করলেও কোরবানীর ঈদ আসলেই গরু, ছাগল, ভেড়াসহ বিভিন্ন গবাদিপশু জবাইয়ের সরঞ্জামাদি দা, চাপাতি ছুড়িসহ অন্যান্য সরঞ্জামাদি বানানোর কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তারা। তাই এ ঈদ আসলেই তাদের ব্যস্ততা বেড়ে যায় অনেকখানি। অন্যান্য সময়ের তুলনায় তাদের কাজের চাপও অনেক বেশি। দিনরাত সমানতালে কাজ করছেন তারা। শেষ মুহুর্তের ব্যস্ততায় এখন বিভিন্ন এলাকার কামাররা। তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ঈদুল আযহা এলেই তাদের কাজের চাপ বেড়ে যায় কয়েকগুণ। ব্যস্ততা বাড়লেও খুশি তারা। তবে ঈদ ছাড়া বাকি দিনগুলোতে তাদের তেমন একটা ব্যস্ততা থাকে না। বছরের অন্যান্য সময় তাদের প্রতিদিন গড়ে ২/৩ শত টাকা আয় হয়। আবার কোনা কোন দিন হয়ই না। তবে এখন আয় কয়েকগুণ বেশি হচ্ছে।
বিভিন্ন বাজারের কামারের দোকানে ঘুরে দেখা যায়, কেউ তৈরি করছে দা, কেউ বা তৈরি করছে চাপাতি আবার কেউ কেউ তৈরি করছে ছুরি। আবার কেউ পুরাতনগুলোর শান দিচ্ছেন এবং নতুনগুলো সারিবব্ধভাবে দোকানের সামনে সাজিয়ে রেখেছেন বিক্রির উদ্দেশ্যে।
মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকার কামার শুকুর আলী বলেন, সারাবছর তেমন কাজ না থাকলেও ঈদের আগে কাজের ব্যস্ততা অনেক বেড়ে যায়। এখন রাতদিন সবসময়ই কাজ করতে হয়।
সাটুরিয়া উপজেলার কৈট্টা এলাকার কামার হরিপদ সাহা বলেন, আমাদের পৈত্রিক পেশা হিসেবে আমরা কামারের কাজ করি। সারাবছরই দা, কাস্তে, ছুড়ি, কোদাল চাপাতিসহ বিভিন্ন প্রকার লোহার সরঞ্জামাদি তৈরি করি। সারাবছরের তুলনায় ঈদের সময় আমাদের আয় অনেক বেড়ে যায়। মামুন নামের অন্য একজন কামার জানান, চাপাতি ২৩০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা, দা ৩৪০ টাকা থেকে ৯০০ টাকা, ছুরি ৭০ টাকা থেকে ১২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছি। দিলীপ নামের আরেক কামার বলেন, কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে আমাদের ব্যবসা এখন খুব ভালো চলছে। এ ঈদকে সামনে রেখে আমরা মোটা অংকের টাকা বিনিয়োগ করে থাকি এবং সেখান থেকে উপার্জিত অর্থে আমরা সারাবছর সংসার চালাই। তাই এখন সারাদিন সারারাত ধরে আমরা পরিশ্রম করে যাচ্ছি। এতে আমাদের উপার্জন ও মোটামুটি ভাল। এদিকে দা,বটি, চাপাতি, ছুরি কিনতে কামারের দোকানে ভিড় করছে সাধারণ মানুষ। কেউ কেউ পুরানো দা ছুরি শান দিতে ভিড় করছে কামারের দোকানে।
দোকানে দা, বটি শান দিতে আসা সাইফুল ইসলাম বলেন, কামারদের কাজের নির্দিষ্ট কোন মূল্য তালিকা না থাকার কারণে তারা নিজেদের ইচ্ছে মতো দাম নিচ্ছে। নিতাই কর্মকার জানান, অন্যান্য পেশার মতো আমাদের কোন সংগঠন না থাকায় আমরা বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা হতে বঞ্ছিত হচ্ছি।
আপনার কোন একাউন্ট না থাকলে রেজিষ্ট্রেশন করুন।