সৌদি আরবে বোমা হামলায় নিহত আফাজ উদ্দিনের বাড়িতে শোকের মাতম
লক্ষ্মীপুর থেকে গাজী গিয়াস উদ্দিন
সৌদি আরবের দক্ষিণাঞ্চলের আসির প্রদেশের একটি মসজিদে সন্ত্রাসীদের বোমা হামলায় নিহত লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চরভূতা গ্রামের আফাজ উদ্দিনের বাড়িতে চলছে শোকর মাতম। সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও দ্রুত আফাজ উদ্দিনের লাশ ফেরৎ চায় বৃদ্ধ মা রাজিয়া খাতুন ও বাবা নুর নবীসহ এলাকাবাসী। গতকাল রোববার সকালে নিহত আফাজ উদ্দিনের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে ছবি বুকে নিয়ে বিলাপ করে কাঁদছে নিহতের মা রাজিয়া খাতুন ও নববধূ আখি আক্তার।
ওসময় তার আরো দু'ভাই বোন ও আত্নীয়স্বজনের কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে এলাকার পরিবেশ। নিহতের স্ত্রী ও নববধূ আঁখি আক্তারের প্রশ্ন? কি দোষ ছিল তার স্বামী আফাজ উদ্দিনের? তার হাতের মেহেদীর রং না মুছতে মোবাইল ফোনে শুনের তার স্বামীর মৃত্যুর খবর। এমন খবরে পেয়ে বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন তিনি। জ্ঞান ফিরে আখি জানতে চান কেন সন্ত্রাসীরা তার স্বামীকে বোমা মেরে হত্যা করেছে। সে তো কোন দোষ করেনি। দ্রুত স্বামীর লাশ ফেরত চাই, এ কথা বলতেই ফের জ্ঞান হারান তিনি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অন্যদের মতো সাধারণভাবে চলতে গিয়ে ও পরিবার পরিজন নিয়ে কোনো রকম চলার চেষ্ঠায় ২০০৮ সালে জমি জমা বিক্রি করে সৌদি আরব (বিদেশ) পাড়ি দেন চরভূতা গ্রামের নুর নবীর ছেলে আফাজ উদ্দিন।
তাদের সংসারের সচ্ছলতা ফিরে আনার জন্য দীর্ঘ ৮ বছর সৌদি আরবে কর্মরত ছিলেন জানান নিহতের পিতা নুর নবী। তিনি আরো জানান,গত ৬ মাস আগে আফাজ উদ্দিন ছুটি নিয়ে বাড়িতে এসে বিবাহ করেন পার্শ্ববতী চরমনসা গ্রামের নুরুল ইসলামের মেয়ে আঁখি আক্তারকে।
বিয়ের পরে সে সৌদি আরবের কর্মস্থলে চলে যান আফাজ উদ্দিন। তার পরিবারের ৫ ভাই ও এক বোনের মধ্যে আফাজ উদ্দিন ভাইদের মধ্যে তৃতীয়। তার বাড়িতে সকাল থেকে ভিড় করছেন শতশত এলাকাবাসী। তারা সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবী কামনা করেছেন।
নিহত আফাজ উদ্দিনের বড় ভাই মোসলেহ উদ্দিন জানান, জমিজমা বিক্রি ও ধার দেনা করে গত ৮ বছর আগে সৌদি আরবে যাবার ব্যবস্থা করা হয় তার ছোট ভাই আফাজ উদ্দিনকে । এখন তিনি শুনতে পান আফাজ উদ্দিনকে বোমা মেরে হত্যা করেছে। কিভাবে ধারদেনা শোধ করবেন। ভাইকে দ্রুত ফেরত চান তিনি। সে সাথে হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেছেন তিনি।