পিরোজপুরে নিলয়ের শেষকৃত্য সম্পন্ন
পিরোজপুর প্রতিনিধি
রাজধানীতে নিজ বাসায় দুর্বৃত্তের হামলায় নিহত বস্নগার নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায় নিলয়ের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে তার গ্রামের বাড়ি পিরোজপুর সদরের টোনা ইউনিয়নের চলিশায়। গতকাল শনিবার মধ্যরাতে বাড়ির শ্মশানঘাটে নিলয়ের শেষকৃত্য হয়। এসময় মা অপর্ণা চট্টোপধ্যায়, বাবা তারাপদ চট্টোপধ্যায় ও ছোট বোন জয়শ্রী চট্টোপধ্যায়সহ শোকার্ত স্বজনদের আহাজরিতে পরিবেশ ভারি হয়ে ওঠে। নিলয়ের শেষকৃত্যে পিরোজপুর সদর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামানসহ পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে নিলয়ের লাশ তার গ্রামের বাড়িতে পৌঁছে রাত সোয়া ১০টায়। এলাকার ছেলে নিলয়কে শেষবারের মতো এক নজর দেখতে তাদের বাড়িতে নামে মানুষের ঢল। এ গ্রামেই শৈশব কাটিয়েছেন নিলয়। সদালাপী ও বিনয়ী স্বভাবের নিলয় তার গ্রামে নিলা/নীলাদ্রি/নান্টু নামে বেশি পরিচিত। তাকে অনেকে নীল নিলয় হিসেবেও চেনে। গত শুক্রবার দুপুরে জুমার নামায শেষ হওয়ার পরপরই ঢাকার পূর্ব গোড়ান টেম্পো স্ট্যান্ডের কাছে ভাড়া বাসায় নিলয়ের ঘরে ঢুকে তাকে কুপিয়ে হত্যা করে কয়েকজন যুবক।
চলিশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষা জীবন শুরু করেন নিলয়। পরে তেজদাসকাঠি উচ্চবিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক এবং পরবর্তীতে সরকারি সোহরাওয়ার্দীতে কলেজ শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন তিনি।
২৭ বছর বয়সী নিলয় রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কালেকটিভ নামে একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতেন। বস্নগে সামপ্রদায়িকতা ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে লেখালেখিতে সক্রিয় ছিলেন তিনি। গণজাগরণ মঞ্চের একজন সংগঠকও ছিলেন।
শোকার্ত স্বজনরা জানান, কয়েকদিন আগেও গ্রামের বাড়ি এসে সকলের সঙ্গে দেখা করে গিয়েছিলেন নিলয়। সেবার সন্তানকে আরও কিছুদিন থেকে যেতে বলেছিলেন মা অপর্ণা চট্টোপাধ্যায়। ছেলেকে কিছুদিন বাড়ি থেকে বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতেও বলেছিলেন তিনি। নীলাদ্রি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, শ্রীলংকা থেকে ফিরে বাড়িতে থাকবেন তিনি।
ভাইয়ের কারও সঙ্গে শত্রুতা ছিলো না জানিয়ে হত্যাকারীদের বিচার দাবি করেছেন একমাত্র বোন জয়শ্রী। নীলাদ্রি আর ফিরে আসবেন না সত্য, তবে তার হত্যাকারীদের যথাযথ বিচার করলে তার আত্মা শান্তি পাবে, কিছুটা হলেও জনমনে স্বস্তি আসবে বলে মনে করেন এলাকাবাসী।