বিকল্প ব্যবস্থা না করে রিকশা বন্ধ করা উচিৎ নয় : বিআইপি
স্টাফ রিপোর্টার
সাধারণ মানুষের কথা বিবেচনা করে বিকল্প ব্যবস্থা ছাড়া রিকশা বন্ধ করা উচিত নয় বলে মত দিয়েছে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি)। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর বীর উত্তম সি আর দত্ত রোডে বিআইপির কনফারেন্স হলে 'ঢাকা শহরে রিকশা ও অযান্ত্রিক
বাহনের চলাচল সম্পর্কে নগর পরিকল্পনার দৃষ্টিকোণ থেকে করণীয়' শীর্ষক সাংবাদিক সম্মেলনে পরিকল্পনাবিদরা এসব কথা বলেন।
বিআইপির সভাপতি এ কে এম আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তব্য দেন, সাধারণ সম্পাদক ড. আদিল মোহাম্মদ খান, সহ-সভাপতি আক্তার মাহমুদ, বুয়েটের অঞ্চল ও নগর পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক মুসলে উদ্দিন, ওয়ার্ক ফর বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর কর্মসূচি ব্যবস্থাপক মো. মারুফ হোসেন, ইউএন-হ্যাবিটেট-এর নগর পরিকল্পনা বিশেষজ্ঞ পরিকল্পনাবিদ মো. সোহেল রানা প্রমুখ।
পরিকল্পনাবিদরা আরো বলেন, রিকশায় প্রতিদিন ট্রিপ পড়ে ২৫-৩০টি। গড়ে ৪০ জন যাত্রী প্রতিদিনই যাতায়াত করে। অন্যদিকে প্রাইভেটকারে প্রতিদিন যাতায়াত করে ২-৪ জন যাত্রী। যা রিকশা চেয়ে সড়ক দখল করে বেশি। আর রিকশায় পরিবেশ দূষণ হয় না, প্রাইভেট কারে পরিবেশ দূষণ হয়, প্রাইভেট কার চলাচল নিয়ন্ত্রণ করুন। একই সঙ্গে সড়কে বিকল্প গণপরিবহণের ব্যবস্থা করতে হবে।
তারা বলেন, গাবতলী-আজিমপুর সড়কের আশপাশের ওয়ার্ডসমূহে আবাসিক এলাকা ৩৯ ভাগ। জনসংখ্যা ১৫ লাখ, প্রতি একরে জনঘনত্ব ৬৬০ জন। আর কুড়িল-সায়েদাবাদ সড়কের আশপাশের ওয়ার্ডসমূহে আবাসিক এলাকা ৫৭ ভাগ। জনসংখ্যা ২১ লাখ, প্রতি একরে জনঘনত্ব ৫৩০ জন। একই সঙ্গে গাবতলী-আজিমপুর সড়কের ২০০ মিটার পরিসেবায় আবাসিক এলাকা ৩৩ ভাগ। আর কুড়িল-সায়েদাবাদ সড়কের ২০০ মিটার পরিসেবায় আবাসিক এলাকা ৫৮ ভাগ। গাবতলী-আজিমপুর সড়কের চেয়ে কুড়িল-সায়েদাবাদ সড়কের আশপাশে জনঘনত্ব বেশি। এই সড়কে গণপরিবহণও কম। সুতরাং বিকল্প ব্যবস্থা না করে রিকশা বন্ধ করা ঠিক হবে না।
বক্তারা বিভিন্ন দাবি জানিয়ে বলেন, শহরের রাস্তার সক্ষমতা বিবেচনাপূর্বক রিকশা এবং ব্যক্তিগত গাড়ির পরিমাণ ও ব্যবহার সুনির্দিষ্ট করতে হবে। জোনভিত্তিক গণপরিবহণ পরিকল্পনা দরকার। চক্রাকার বাস সার্ভিসের মতো সব শ্রেণী পেশার মানুষের জন্য মানসম্মত কমিউনিটি ভিত্তিক ট্রানজিট ব্যবস্থা চালু করতে হবে যেন মানুষ রিকশা কিংবা ব্যক্তিগত গাড়ির বিকল্প খুঁজে পায়। সম্মেলনে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের সাধারণ সম্পাদক পরিকল্পনাবিদ ড. আদিল মুহাম্মদ খান প্রেজেন্টেশনে বলেন, ব্যয়, সময় ও মানুষের ভোগান্তি বাড়ছে। একটি সুনির্দিষ্ট নিয়ন্ত্রণ কাঠামো ও পরিকল্পনা ছাড়া যানজট ও পরিবেশ দূষণের বিরূপ প্রতিক্রিয়া সামনের দিনগুলোতে ঢাকার মানুষের জীবনকে আরও বিপর্যস্ত করে তুলবে। তিনি বলেন, কম দৈর্ঘ্যের পথে কম সময়ে গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য রিকশাকে বেছে নিয়েছে অনেকেই। ১৯৮৬ সালের ঢাকা সিটি কর্পোরেশনে সর্বশেষ রিকশা ভ্যানের নিবন্ধন দেয়া হয়। তারপর থেকে রাজধানীতে কাগজে কলমে আর কোনো নতুন রিকশার লাইসেন্স বা অনুমোদন দেয়া হয়নি। দুই সিটি মিলিয়ে বৈধ রিকশার সংখ্যা ৭৯ হাজার ৫৪৭টি। তবে রাস্তাই চলাচলকারী রিকশার সংখ্যা বিভিন্ন তথ্যমতে ৮-১০ লাখ।
আপনার কোন একাউন্ট না থাকলে রেজিষ্ট্রেশন করুন।