ফুলবাড়ীতে প্রতিবন্ধী শিশু ধর্ষণ ঘটনা ধামাচাপার চেষ্টা ধর্ষকসহ আটক ২
ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে চতুর্থ শ্রেণির (১১) এক প্রতিবন্ধী শিশু ধর্ষণের ঘটনা সালিশের নামে ধামাচাপা দেয়া চেষ্টার অভিযোগে ধর্ষক মেহেদুল ইসলামসহ দুই জনকে আটক করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় ধর্ষিতার মা বাদি হয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার ফুলবাড়ী থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন।
পুলিশের হাতে আটক ধর্ষক মেহেদুল ইসলাম (৪৬) রামভদ্রপুর আবাসনের বাসিন্দা জহির উদ্দিনের ছেলে,ও ধর্ষকের সহযোগী সুজন
ফুলবাড়ী উপজেলার রামভদ্রপুর গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে।
জানা যায়, গত ৩ জুলাই ফুলবাড়ী উপজেলার ৭ নং মিবনগর ইউনিয়নের রামভদ্রপুর আবাসন এলাকায় বেলা ১টায় আবাসনের বাসীন্দা রিকশা-ভ্যান চালককের চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ুয়া প্রতিবন্ধী মেয়ে দোকানে জুস নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে, একই আবাসনের বাসিন্দা দুই স্ত্রীর স্বামী মেহেদুল ইসলাম (৩৫) শিশুটিকে জঙ্গলে নিয়ে ধর্ষণ করে। এই ধর্ষণ ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার জন্য শুরু হয় শিশুর পিতা-মাতার ওপর বিভিন্ন ধরনের চাপসহ হুমকি। এক পর্যায়ে সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে ১৪ হাজার টাকায় ধর্ষণ ঘটনাটি মীমাংসা করতে বাধ্য করে ঘটনাটিকে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করা হয়। শুধু তাই নয়, সালিশে অভিযুক্ত ধর্ষককে ১৪ হাজার টাকা জরিমানা করা হলেও, ধর্ষিতা ওই শিশুর পিতাকে দেয়া হয়েছে মাত্র ৭ হাজার টাকা। বাকি ৭ হাজার টাকা ভাগবাটোয়ারা হয়েছে উপস্থিত কথিত দুই সাংবাদিকসহ সালিশকারীদের মধ্যে।
এই ঘটনাটি বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশ হলে নাড়ে-চড়েবসে প্রশাসন, ফলে গতকাল বৃহস্পতিবার ধর্ষক মেহেদুল ও তার সহযোগী সালিশকারী সুজনকে আটক করে পুলিশ।
ধর্ষিতার পিতা সাংবাদিকদের বলেন, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে যাতে ভবিষ্যতে অভিযুুক্তের বিরুদ্ধে যেন কোন প্রকার আইনের আশ্রয় নিতে না পারি এবং বিষয়টি যেন কারো কাছে ফাঁস না করি সেজন্য ৩০০ টাকা মূল্যের সাদা স্ট্যাম্পে তাঁর স্বাক্ষর নিয়েছে শালিশকারীরা।
ধর্ষিতার পিতা বলেন, প্রতিবন্ধী শিশুর সাথে ধর্ষণের ঘটনার পর থেকে তিনি দিশেহারা হয়ে পড়েছিলেন। এই সময় একই এলাকার শফিকুল ইসলাম, ইউপি মেম্বার সাইফুল ইসলাম বাবলু, গ্রাম পুলিশ আব্বাস উদ্দিন ও আবাসনের বাসিন্দা মো. সুজন তার উপর চাপ সৃষ্টি করে ঘটনাটি আপোস করার জন্য। তিনি বলেন তাদের চাপে পড়ে ওইদিন বেলা দুইটায় আবাসনে সালিশে উপস্থিত থাকেন। সালিশের সময় দুইজন সাংবাদিকও উপস্থিত ছিলেন। সালিশে ধর্ষক মেহেদুলকে ১৪ হাজার টাকা জরিমান করা হয়। কিন্তু তিনি পেয়েছেন ৭ হাজার টাকা। বাকী টাকাটা নিজেদের মধ্যে ভাগবাটোয়ার করে নিয়েছেন সালিশকারীরা।
ফুলবাড়ী থানার ওসি ফকরুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি জানার পরেই তিনি ধর্ষককে আটক করেছেন এবং ধর্ষিতাকে হেফাজতে নিয়েছেন, গতকাল বৃহস্পতিবার ধর্ষিতার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার জন্য দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেছেন।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুস সালাম চৌধুরী বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে ঘটনার সাথে জড়িত প্রত্যেক অপরাধীকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।
আপনার কোন একাউন্ট না থাকলে রেজিষ্ট্রেশন করুন।