দেবিদ্বারে মা-ছেলেসহ ৩ জনকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় ২ মামলা
কুমিল্লা উত্তর প্রতিনিধি
কুমিল্লার দেবিদ্বারে মা-ছেলেসহ তিন জনকে কুপিয়ে হত্যা ও গণপিটুনীতে ঘাতক নিহতের ঘটনায় থানায় পৃথক দুই মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত বুধবার রাতে নিহত নাজমার ছোট ভাই রুবেল হোসেন বাদী হয়ে একটি ও ঘাতক মোখলেছুর রহমানের স্ত্রী রাবেয়া বেগম বাদী হয়ে অপর মামলাটি দায়ের করেন। পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে রাধানগর গ্রামের মোতালেব মিয়ার ছেলে রিকশা চালক মোখলেছুর রহমান একটি ধারালো দা ক্রয় করে বাড়িতে এসে আকস্মিকভাবে লোকজনকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। এ সময় প্রতিবেশি নুরুল ইসলামের স্ত্রী নাজমা আক্তার (৪০), মৃত শাহ আলমের ছেলে আবু হানিফ (১০) এবং স্ত্রী আনোয়ারা বেগমকে (৪৫) কুপিয়ে হত্যা করে। ওই সময় ঘাতক মোখলেছের দায়ের কুপে আব্দুল লতিফ (৪৫), মাজেদা বেগম (৬৫), নুরুল ইসলাম (৫০), রাবেয়া বেগম (৪০), ফাহিমা (১০), জাহানারা বেগম (৫০)সহ আরো ৬ জন আহত হয়। তারা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। আহতদের মধ্যে মাজেদা বেগম ও জাহানারা বেগমের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা যায়। এ সময় ঘাতকের তা-বলীলা দেখে স্থানীয় লোকজন মসজিদের মাইকে ঘোষণা করলে বিপুল সংখ্যক জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাকে আটক করে গণপিটুনী দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই ঘাতক মোখলেছ মারা যায়। এ ঘটনায় গত বুধবার রাতে নিহত নাজমা বেগমের ছোট ভাই রুবেল হোসেন বাদী হয়ে ঘাতক মৃত মোখলেছুর রহমানকে একমাত্র আসামি করে একটি ও ঘাতক মোখলেছুর রহমানের স্ত্রী রাবেয়া বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাত ১০০০/১৫০০ ব্যক্তিকে আসামি করে অপর মামলাটি দায়ের করে।
এ দিকে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে ঘাতক মোখলেছুর রহমানসহ নিহত চার জনের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের সদস্যদের নিকট হস্তান্তর করে পুলিশ। এ সময় ঘাতক মোখলেছের লাশ হস্তান্তর করতে তার পরিবারের কোনো সদস্যকে পাওয়া যায়নি। পরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে কয়েকজন লাশ গ্রহণ করে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালেই জানাযা শেষে নিহত আনোয়ারা বেগম ও তার ছেলে আবু হানিফকে তালতলা আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। নাজমা আক্তার ও ঘাতক মোখলেছুর রহমানের লাশ দাফন করা হয় রাধানগর গ্রামের গণকবর স্থানে।
সুলতানপুর ইউপি চেয়ারম্যান সফিকুল ইসলাম জানান, ঘাতক মোখলেছুর রহমানের লাশ দাফন না করতে এলাকাবাসী ঐক্যবদ্ধ হয়ে যায়। আমি এলাকাবাসীকে বুঝিয়ে শান্ত করি এবং লাশ দাফন করার ব্যবস্থা করি। দেবিদ্বার থানার ওসি জহিরুল আনোয়ার জানান, উপজেলার রাধানগর গ্রামের ৪ হত্যাকা-ের ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা রুজু করা হয়েছে। এ ঘটনার নেপথ্যে অন্য কোনো কারণ আছে কিনা সে বিষয়টি আমরা গভীরভাবে খতিয়ে দেখছি।
আপনার কোন একাউন্ট না থাকলে রেজিষ্ট্রেশন করুন।