অধিকার আদায়ের আন্দোলনকারীদের দমন-পীড়নের ফলে যেসব হৃদয় বিদারক ঘটনা জন্ম নিচ্ছে তা অমানবিক। শ্রমজীবী বাবা-মায়ের একমাত্র ভরসাকে যখন চোখের সামনে অজানা পরিণতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে, তখন মায়ের আহাজারিতে আকাশ বিদীর্ণ হয়, বাতাস ভারি হয়ে ওঠে। মায়ের দাবি, আমার মণি তো কোনো অন্যায় করেনি। সে শুধু একটা চাকরি করতে চেয়েছিল। যখন অসহায় মা
ছেলের মুক্তির জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরে তার মণিকে মাফ করে দেয়ার আকুতি জানায়, ভিক্ষা চায়, তখন মানবতা কেঁপে ওঠে। কাঁপে না উপাচার্যের মন, বিবেক জাগে না শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হামলাকারীদের এবং মদদ দাতাদের।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা হামলা, মামলার সাথে হাতুড়িপেটারও শিকার হয়। হাতুড়ির আঘাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তরিকুলের হাঁটুর নিচে এক পায়ের হাড় ভেঙে গেছে। অস্ত্রপচার না করে তাকে সুস্থ করা যাবে না। কিন্তু সে ব্যয় বহন করার মতো সামর্থ্য তার পরিবারের নেই। অথচ সহপাঠীদের সহায়তায় তাকে রাজশাহী মেডিকেলে ভর্তি করলেও চিকিৎসা শেষ না করেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে ছাড়পত্র দিয়ে দেয়। তরিকুলের কৃষক বাবার কান্নাজড়িত আকুতি 'আমার সন্তান আমার কাছে কিছু চাইতেই পারে, আমি ভাল মনে করলে দিব, নয়তো দিব না। তাই বলে সন্ত্রাসী দিয়ে মেরে ফেলতে পারি না'।
দুঃখী মা আর কৃষক বাবার কান্না, গণতন্ত্রের কান্না। যা উপেক্ষা করা দুঃসাধ্য। তাদের আকুল আবেদন আমাদের উচ্চ শিক্ষিত সমাজের জন্য খুবই লজ্জাজনক।
পুনশ্চ : কোটা সংস্কার আন্দোলন স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতিবান্ধব একটি ব্যবস্থার বিরুদ্ধে আন্দোলন। সরকার তা আমলে নিলে সবার জন্য কল্যাণকর হতো। আল্লাহ্ সবাইকে সুমতি দিক।
আপনার কোন একাউন্ট না থাকলে রেজিষ্ট্রেশন করুন।