দেশের পোট্রি শিল্পে নতুন সংযোজন টারকি। রঙিন মাংসল মুরগি, দারুন চঞ্চল আর আদরপ্রিয় এক পোট্রি প্রজাতি। যা খামারকে সমৃদ্ধ করে তোলে তার আপন বৈশিষ্ট্যে। তারই ধারাবাহিকতায় সমুদ্র উপকূলীয় কলাপাড়ার অনেক সৌখিন উদ্যোক্ত গড়ে তুলেছেন উন্নত মাংসের বৃহৎ পাখি এই টারকির খামার। ছোট্ট পরিসরে শুরু করলেও অল্পদিনেই খামারিরা পাচ্ছেন অভাবনীয় সাফল্য। উপজেলার লতাচাপলী ইউনিয়নের খাজুরা গ্রামের সোলায়মান খলিফা গড়ে তুলেছেন একটি ছোট টারকির খামার। সখের বশে মাত্র ২৩ হাজার পাচঁশ টাকায় দুই জোড়া টারকি কিনে পালন শুরু করেন। আর বছর ঘুরতেই হয়ে ওঠেন ছোট্র এক বানিজ্যিক খামারি। ইতোমধ্যে তার খামারে স্থান পেয়েছে প্রচলিত অপ্রচলিত কয়েক জাতের টারকি। একই সঙ্গে গড়ে তুলেছেন তার নিজ বাড়িতে টারকি পালন ও বাজারজাত করণের একটি ছোট্ট অস্থায়ী প্রতিষ্ঠান। এখন তার দেখাদেখি অনেকেই আগ্রহী
হয়ে উঠেছেন টারকি পালনে। খামারি সোলায়মান জানান, বছর কয়েক আগে টিভিতে দেখে সখের বসে সাতক্ষীরা থেকে মাত্র দুই জোড়া টারকি নিয়ে এসে পালন শুরু করেন। তা থেকে প্রায় দুই লাখ টাকা বিক্রি করেছেন। এর পরেই তিনি টারকি পালনে শতকরা প্রায় ৮০ ভাগ লাভজনক হওয়ায় বাণিজ্যিক ভাবে শুরু করেন। বর্তমানে বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় দুইশত টারকি রয়েছে তার খামারে। তিনি জানান, এক একটি টারকি মুরগি ২৫ থেকে ৩০টি পর্যন্ত ডিম দিয়ে থাকে। আর এক জোড়া ডিম বিক্রি হয় ৪০০ শত টাকা দরে। এছাড়া ডিম ফুটিয়ে মাত্র ৫ দিনের বাচ্চা জোড়া প্রতি এক হাজার টাকা দরে বিক্রি হয়। তাছাড়া আলাদাভাবে কোন খাবারের প্রয়োজন হয় না। অন্যান্য দেশি পোল্ট্রি প্রজাতির মত স্বাভাবিক খাবারই খেয়ে থাকে। তবে এ খামারি জানিয়েছেন, বেশি একটা পুজি না থাকায় ব্যাপকভাবে খামার প্রস্তুত করতে পারছেন না। চাহিদা অনুযায়ী সবসময় টারকির ঘাটতি মেটানো যায় না। অনেক দুর দুরান্ত থেকে ক্রেতারা এসেও খালি হাতে ফিরে যায়। চালানের অভাবে বেশি একটা টারকি সংগ্রহে রাখতে পারছেন না। সরকারের পক্ষ থেকে যদি কোন ধরনের লোন কিংবা সহযোগিতা বছরে কয়েক লক্ষ টাকা আয় করা যেত বলে তিনি জানান। ময়ূর আকৃতির দেখতে এ টারকি প্রজাতি পালনে আগ্রহি অনেকেই জানিয়েছেন ১০ থেকে ১২ হাজার টাকায় প্রাপ্ত বয়স্ক দুই এক জোড়া টারকি কিনতে পাওয়া গেলেও সেভাবে ব্যাপক হারে কিনতে পাওয়া যায় না। স্থানীয়ভাবে যারা ইতোমধ্যে ছোট খাটো খামারি হয়ে উঠেছেন তাদের সরকারিভাবে সহযোগিতা করলে হয়তো ব্যপক বিস্তার ঘটবে এবং এখান থেকে কিনে সৌখিন বেকারদের বেকারত্বও কমবে বলে অনেকই অভিমত ব্যক্ত করেছেন। কলাপাড়া উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা মো.হাবিবুর রহমান জানান, টারকি পাখির মাংস পুষ্টিকর এবং খুবই সুস্বাদু। তবে এ বৃহত পাখি সম্মন্ধে বাংলাদেশ প্রানীসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে এখন পর্যন্ত কোন ধারণা আমাদের দেয়া হয়নি। তিনি বলেন , টারকি জাত এদেশে সঠিক পরিচর্য়ার মাধ্যমে লালন পালন করতে পারলে বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান বারবে বলে তিনি মনে করেন।
আপনার কোন একাউন্ট না থাকলে রেজিষ্ট্রেশন করুন।