কালিগঞ্জের দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নের ফতেপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও দফতরির গাফিলতিতে এক শিক্ষার্থী দীর্ঘক্ষণ পর্যন্ত স্কুলের টয়লেটে অবরুদ্ধ ছিল বলে জানা গেছে। এ ঘটনাকে আলোচিত 'ছুটির ঘন্টা' নামক সিনেমা হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।
গত বৃহস্পতিবার বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, উপজেলার ফতেপুর গ্রামের হরবিন্দু দাশের ছেলে ৫ম শ্রেণীর ছাত্র নিলয় দাশ প্রতিদিনের মত বুধবার দুপুর ১২ টায় স্কুলে যায়। বিকেল ৪ টায় স্কুল ছুটি হয়ে গেলেও সে বাড়িতে ফিরে না যাওয়ায় তার পিতা-মাতা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুুঁজির একপর্যায়ে স্কুল ছাত্র নিলয়ের মা-বাবা ফতেপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম রব্বানী এবং নৈশপ্রহরী আব্দুল হাইয়ের কাছে যেয়ে নিলয়ের বিষয়ে জানতে চান। এসময় তাদের ছেলে স্কুলের টয়লেটে আটকা পড়েছে কিনা সন্দেহ পোষণ করে বিষয়টি যাচাই করার জন্য প্রধান শিক্ষকের নিকট অনুরোধ জানান। এরপরও প্রধান শিক্ষক গোলাম রব্বানী নিলয়ের মা-বাবাকে ধমক দিয়ে বলেন, অতবড় ছেলে টয়লেটে আটকা পড়বে কী করে? অন্য কোথাও খুজে দেখেন। এরপর ফিরে এসে সম্ভাব্য সব স্থানে খোঁজাখুজি করে না পেয়ে রাত ১১ টার সময় স্কুলের টয়লেটের পাশে যেয়ে চিৎকার করে নিলয়ের নাম ধরে ডাকাডাকি করতে থাকে নিলয়ের মা-বাবা ও স্বজনরা। তখন টয়লেটের ভিতর থেকে সাড়া দেয় নিলয়। সাথে সাথে স্কুলের নৈশ প্রহরী আব্দুল হাইয়ের সহায়তায় তালা খুলে স্কুলের টয়লেট থেকে অসুস্থ অবস্থায় নিলয়কে উদ্ধার করা হয়।
নিলয় জানায়, স্কুলে ছুটির অল্প সময় আগে আমি টয়লেটে যাই। বের হয়ে দেখি টয়লেটের বাইরের গেটে তালা দেওয়া। আমি তালা দেওয়া দেখে চিৎকার করতে থাকি। কিন্তু কেউ আমাকে উদ্ধার করতে আসেনি। এরপর আমি ভয়ে অজ্ঞান হয়ে যাই। পরে মা-বাবার ডাকাডাকি শুনে আমার জ্ঞান ফেরে। স্কুল কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় একটি কোমলমতি শিশুর জীবন নিয়ে শংকা সৃষ্টি হওয়ায় এলাকার অভিভাবকসহ সর্বস্তরের মানুষের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। দীর্ঘদিন একই স্কুলে দায়িত্ব পালনকারী ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আরও অনেক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে বলে তারা জানান এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে এর প্রতিকার দাবি করেছেন। এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষকের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও বন্ধ থাকায় বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। কালিগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) শেখ ফারুখ হোসেন জানান, বিষয়টি আমি ওই ক্লাস্টারের দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার আসাদুজ্জামান এর মাধ্যমে জানতে পেরেছি। আগামী রোববার আমি কর্মস্থলে যেয়ে বিষয়টি দেখবো।
আপনার কোন একাউন্ট না থাকলে রেজিষ্ট্রেশন করুন।