প্রতি বছরই শীতের শেষের দিকে রাজধানী ঢাকার অবকাঠামোতগত মেরামতের কাজ শুরু হয়। বিশেষ করে রাস্তা মেরামত, নর্দমার জন্য মোটা পাইপ, গ্যাস লাইন, পানির লাইন, টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার ক্যাবল বসানোর জন্য রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির হিরিক পড়ে যায়। সম্প্রতি এর সাথে যোগ হয়েছে মেট্রো রেলের কাজ। আর সাড়া রাজধানী ছেঁয়ে আছে ফ্লাইওভার নির্মাণের মহাযজ্ঞ। সব মিলিয়ে ঢাকা সিটির যেন ওপেন সার্জারি চলছে।
উন্নয়ন ও জনস্বার্থের জন্য উক্ত কাজগুলোর বেশিরভাগই অপরিকল্পিত। সেই সাথে প্রতিটি কাজের দীর্ঘসূত্রতা নাগরিকের জন্য ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। খোঁজাখুঁড়ির জন্য যেমন যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। তেমনই পায়ে হাঁটাও অনেক সময় দুষ্কর হয়ে উঠছে। আর নির্মাণাধীন কাজের গর্তে পড়ে বা খোলা ম্যানহোলে পড়ে শিশুমৃত্যুর খবরও মামুলি। তাছাড়া বায়ুদূষণের কারণে জনস্বাস্থ্যেরও ঝুঁকি বাড়ছে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা সংস্থা হেলথ ইফেক্টস ইনস্টিটিউট এবং ইনস্টিটিউট ফর হেলথ মেট্রিকস অ্যান্ড ইভাল্যুয়েশনের যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বে বায়ুদূষণে ঢাকার অবস্থান দ্বিতীয়। আরও আতঙ্কের বিষয় যে, বায়ুদূষণ ক্রমবর্ধমান। এই পরিস্থিতিকে নীতিনির্ধারকদের বিবেচনায় নেয়া উচিত।
আবার সামনে আসছে বৃষ্টির দিন। আলগা ধুলোমাটি কাদায় পরিণত হয়ে আরেক জঞ্জালের সৃষ্টি হয়। তাছাড়া বৃষ্টির পানিতে রাস্তা ডুবে যাওয়ার ভোগান্তিও স্মরণযোগ্য। তাই রাজধানীর এই সার্জারির যত তাড়াতাড়ি অবসান হয়, ততোই মঙ্গল।
পুনশ্চ : নাগরিক জীবনের সুবিধার্থেই এই মেরামত কাজ। তবে প্রকল্পের মেয়াদ না বাড়িয়ে জনদুর্ভোগ লাঘবে নীতিনির্ধারকদের হস্তক্ষেপ আহ্বান করছি।
আপনার কোন একাউন্ট না থাকলে রেজিষ্ট্রেশন করুন।